Table of Contents
চাইনিজ এবং গ্লোবাল ভেরিয়েন্ট: কোনটি ভালো?
শাওমি ফোন কেনার সময় অনেকেই গ্লোবাল এবং চাইনিজ ভেরিয়েন্টের মধ্যে বিভ্রান্তিতে পড়েন। এই আর্টিকেলটি লক্ষ্য রাখবে, আপনি কোন ভেরিয়েন্টটি কেনার আগে বিবেচনা করবেন, এবং কেন এই দুটি ভেরিয়েন্টের মধ্যে দাম, পারফরম্যান্স এবং ফিচারের দিক থেকে পার্থক্য রয়েছে।
চাইনিজ এবং গ্লোবাল ভেরিয়েন্টের প্রেক্ষাপট
শাওমি বিভিন্ন বাজারের জন্য আলাদা আলাদা ফোনের সংস্করণ তৈরি করে। এগুলি সাধারণত গ্লোবাল এবং চাইনিজ ভেরিয়েন্ট হিসেবে পরিচিত। গ্লোবাল ভেরিয়েন্ট সাধারণত আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য তৈরি হয়, যেখানে গুগল সেবা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক অ্যাপস সহজে অ্যাক্সেস করা যায়। অন্যদিকে, চাইনিজ ভেরিয়েন্ট মূলত চীনের বাজারের জন্য তৈরি, যেখানে স্থানীয় অ্যাপস এবং সার্ভিসগুলো বেশি ব্যবহৃত হয়।
দাম এবং বাজেট
দাম নির্ধারণের কারণ
- চাইনিজ ভেরিয়েন্ট:
- সাধারণত কম দামে পাওয়া যায়।
- গুগল প্লে স্টোর এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সেবা অন্তর্ভুক্ত নয়, যা খরচ কমায়।
- গ্লোবাল ভেরিয়েন্ট:
- কিছুটা বেশি দামি, তবে এতে গুগল সেবা ও অন্যান্য সুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকে।
- আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রির জন্য সব ধরনের সাপোর্ট এবং আপডেট প্রদান করা হয়।
ডিজাইন এবং বিল্ড কোয়ালিটি
বৈশিষ্ট্য | চাইনিজ ভেরিয়েন্ট | গ্লোবাল ভেরিয়েন্ট |
---|---|---|
ডিজাইন | একই ডিজাইন | একই ডিজাইন |
ব্লোটওয়্যার | প্রি-ইনস্টলড কিছু অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস | কম ব্লোটওয়্যার, ব্যবহারকারী-বান্ধব ইন্টারফেস |
গুগল সাপোর্ট | নেই (থার্ড-পার্টি থেকে ইন্সটল করতে হয়) | ইন-বিল্ট গুগল প্লে স্টোর |
পারফরম্যান্স | কিছু সমস্যা ও স্টোরেজ অপচয় হতে পারে | অধিক স্থিতিশীল পারফরম্যান্স |
দাম | সাধারণত কম | সাধারণত বেশি |
সফটওয়্যার এবং ইউজার ইন্টারফেস
সফটওয়্যার পার্থক্য
- চাইনিজ ভেরিয়েন্ট:
- MIUI এর চাইনিজ সংস্করণ দিয়ে আসে, যেখানে স্থানীয় অ্যাপসের উপস্থিতি বেশি থাকে।
- অনেক সময় প্রি-ইনস্টলড অ্যাপস যেমন WeChat, Baidu এবং অন্যান্য স্থানীয় সেবা থাকে।
- গ্লোবাল ভেরিয়েন্ট:
- গ্লোবাল সংস্করণে MIUI এর আন্তর্জাতিক সংস্করণ থাকে, যা গুগল সেবা সমর্থন করে।
- ইউজার ইন্টারফেস বেশি ব্যবহারকারী-বান্ধব এবং সহজে Navigatable।
গুগল সাপোর্ট
- চাইনিজ ভেরিয়েন্ট: গুগল প্লে স্টোর নেই, তাই আপনাকে থার্ড-পার্টি অ্যাপস স্টোর থেকে ইনস্টল করতে হবে। এটি ব্যবহারকারীদের জন্য কিছুটা ঝামেলার কারণ হতে পারে।
- গ্লোবাল ভেরিয়েন্ট: ইন-বিল্ট গুগল প্লে স্টোর এবং গুগল অ্যাপস যেমন Gmail, YouTube, Google Maps, ইত্যাদি।
পারফরম্যান্স
হার্ডওয়্যার স্পেসিফিকেশন
দুটি ভেরিয়েন্টের পারফরম্যান্স সাধারণত একই। তারা একই প্রসেসর, র্যাম এবং স্টোরেজ অপশন নিয়ে আসে। তবে পারফরম্যান্সে কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়:
- চাইনিজ ভেরিয়েন্ট:
- কিছু সময়ে অপ্রয়োজনীয় ব্লোটওয়্যার এবং স্থানীয় অ্যাপস থাকার কারণে পারফরম্যান্সে ধীরগতির সম্মুখীন হতে পারে।
- গ্লোবাল ভেরিয়েন্ট:
- অধিক স্থিতিশীল এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ পারফরম্যান্স প্রদান করে।
- দীর্ঘ সময় ব্যবহারের পরও অ্যাপস চালাতে সমস্যা হয় না।
স্টোরেজ ও মেমরি ব্যবস্থাপনা
- চাইনিজ ভেরিয়েন্ট: কিছু স্টোরেজ অপচয় হতে পারে। অধিক ব্লোটওয়্যার থাকায় তা ব্যবহারে অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে।
- গ্লোবাল ভেরিয়েন্ট: অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভাল স্টোরেজ ব্যবস্থাপনা এবং দ্রুত অ্যাপ লোডিং।
দাম কেন চাইনিজ ভেরিয়েন্টের কম?
- অফিসিয়াল গুগল প্লে স্টোরের অভাব: চাইনিজ ভেরিয়েন্টে গুগল সাপোর্ট না থাকায় দাম কম থাকে।
- অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস: প্রি-ইনস্টলড অ্যাপস ও স্থানীয় সেবা থাকার কারণে দাম কম।
দাম কেন গ্লোবাল ভেরিয়েন্টের বেশি?
- অফিসিয়াল সাপোর্ট: গুগল প্লে স্টোর এবং অন্যান্য সুবিধার জন্য দাম বেশি।
- ব্যবহার সহজ: ইউজারদের জন্য সুবিধাজনক এবং সমস্যা মুক্ত ব্যবহারের অভিজ্ঞতা।
চাইনিজ ভেরিয়েন্টের নেতিবাচক দিক
- ব্লোটওয়্যার: অনেক অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস।
- ঝামেলা: ব্যবহারে কিছু সমস্যা হতে পারে।
গ্লোবাল ভেরিয়েন্ট কেনার উপকারিতা
- সহজ ব্যবহার: ইউজারদের জন্য সহজে অ্যাপস খুঁজে পাওয়া।
- ঝামেলা মুক্ত: অধিক সুবিধা ও স্টেবল পারফরম্যান্স।
সারসংক্ষেপ
গ্লোবাল ভেরিয়েন্টের সুবিধা এবং চাইনিজ ভেরিয়েন্টের অসুবিধা সম্পর্কে জানার পর, আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন কোন ভেরিয়েন্টটি আপনার জন্য উপযুক্ত।
সাধারণ প্রশ্নাবলী (FAQ)
- ১. চাইনিজ ভেরিয়েন্টে গুগল অ্যাপস ব্যবহার করা যাবে?
হ্যাঁ, তবে আপনাকে গুগল প্লে স্টোর থার্ড-পার্টি স্টোর থেকে ইন্সটল করতে হবে। - ২. গ্লোবাল ভেরিয়েন্ট কেনার সময় কোন বিষয়টি মনে রাখতে হবে?
গ্লোবাল ভেরিয়েন্টে গুগল প্লে স্টোর ইন-বিল্ট থাকে, যা ইউজারদের জন্য সুবিধাজনক। - ৩. কোন ভেরিয়েন্টের পারফরম্যান্স ভালো?
গ্লোবাল ভেরিয়েন্টের পারফরম্যান্স সাধারণত বেশি স্থিতিশীল। - ৪. চাইনিজ ভেরিয়েন্টের দাম কম কেন?
গুগল প্লে স্টোরের অভাব এবং ব্লোটওয়্যার থাকার কারণে দাম কম। - ৫. গ্লোবাল ভেরিয়েন্টের দাম কেন বেশি?
অফিসিয়াল গুগল প্লে স্টোর ও অন্যান্য সুবিধা থাকার কারণে গ্লোবাল ভেরিয়েন্টের দাম বেশি। - ৬. চাইনিজ ভেরিয়েন্ট কিনলে কি সমস্যা হতে পারে?
ব্লোটওয়্যার ও অপ্রয়োজনীয় অ্যাপসের কারণে পারফরম্যান্সে সমস্যা হতে পারে এবং গুগল সাপোর্টের অভাব রয়েছে। - ৭. ফোনের কোন ভেরিয়েন্ট ব্যবহার করা উচিত?
যদি আপনি সহজ ও ঝামেলাবিহীন ব্যবহার চান, তাহলে গ্লোবাল ভেরিয়েন্ট কিনা আপনার জন্য উপযুক্ত।
শেষ কথা
এই আর্টিকেলে আমরা শাওমির চাইনিজ এবং গ্লোবাল ভেরিয়েন্টের মধ্যে পার্থক্য, সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করেছি। গুগল সাপোর্ট, পারফরম্যান্স এবং দাম সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক তুলে